নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
আসন্ন ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা করেছেন মেরুরচর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জেহাদ। শনিবার রাতে খেওয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জেহাদের পিতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব গোলাম মওলা। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন।
মতবিনিময় সভায় মেরুরচর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জেহাদ তার বক্তব্যে বলেন,আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমার রক্ত আওয়ামীলীগের রক্ত। আপনারা আমাকে ভালোবেসে যে ইমানি দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। আমি আমার দায়িত্ব সততার সাথে পালন করেছি। জানিনা কতটুকু করতে পেরেছি। এই ৫ বছরে যতটুকু ভালো কাজ করেছি তার সবকিছুর কৃতিত্ব আপনাদের। আর যতটুকু করতে পারিনি তার সমস্ত ব্যার্থতা আমার। আমি কোন অন্যায় অনিয়ম দুর্নীতি করিনাই। টিআর,কাবিখা,ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা,প্রতিবন্ধী ভাতা,শিশু ভাতা সহ সরকারি যত অনুদান আছে সবকিছুই স্বচ্ছতার সহিত বিতরন করেছি। কেউ যদি বলতে পারে আমি গত ৫ বছরে সরকারি কোন অনুদান বিতরনে কারো কাছে একটি টাকাও নিয়েছি তাহলে আর চেয়ারম্যানের নাম মুখে নিবনা। চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আমি কোন অনিয়ম দুর্নীতি করিনাই। বিচার শালিসের নামে কারো পক্ষে বিপক্ষে কাজ করিনাই। আমার কাছে যা ন্যায় সঙ্গত মনে হয়েছে তাই করেছি। চলতে পথে হয়তো সবার মন আমি জয় করতে পারিনি, তবে কারো মনে কখনো কষ্ট দেইনি। নিজে শত কষ্টের মাঝে থেকেও সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলেছি। আপনারা চারিদিকে খবর নিয়ে দেখবেন আমার হয়তো কোন সুনাম নেই তবে বদনামও কিন্তু নেই। আপনাদের সুনাম ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কাজ আমি করিনাই।
যদি কাগজে কলমে প্রমান দিতে পারেন আমি কোন কাজের বিনিময়ে একটি টাকাও নিয়েছি তাহলে নির্বাচনের নাম মুখে নিবনা। যদি একজন লোকও বলতে পারে কারো কাছে কোন কাজের বিনিময়ে একটি চকলেটও খেয়েছি তাহলে মেরুরচর ইউনিয়নের সকল মানুষের পায়ের জুতা মাথায় নিয়ে চলে যাবো। কখনো চেয়ারম্যানের নাম মুখে নিবোনা। এই ইউনিয়নে যদি চল্লিশ হাজার মানুষ থাকে তাহলে আমি অন্তত ১০ হাজার মানুষকে বাই নেমে চিনি। যদি কোন প্রার্থী ১০ হাজার মানুষের নাম বলতে পারে তাহলেও নির্বাচন করবো না। জামালপুরের ৭ টি উপজেলা ও শেরপুরের ৫ টি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে আপনারা আমার সাথে যাবেন আমি ব্যাক্তি জেহাদকে যদি অন্তত ২০ জন লোকে না চেনে তাহলেও আমি নির্বাচন করবো না। সময় এসেছে সিদ্ধান্ত আপনাদের নিতে হবে। কারো মিষ্টি কথায় ভুলে আগামী প্রজন্মের ক্ষতি করবেন না। আশা করি সব দিক বিচার বিশ্লেষন করে আপনারা আমার সাথে থাকবেন।
আমি হলফ করে বলতে পারি মানুষের বিন্দুমাত্র ক্ষতি করিনাই। তবে কাজ করতে গেলে মানুষ মাত্রই ভূল হবে। শুধু ফেরেশতাদের ভূল হয়না। তাই আমার চলার পথে মনের অজান্তে কখনো যদি আপনাদের মনে বিন্দুমাত্র কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমি হাতজোড় করে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।
জেহাদ চেয়ারম্যান আরো বলেন,আপনারা আমার মনিব,আর আমি আপনাদের সেবক, সেই হিসেবেই পথ চলেছি। আপনাদের চোখের দিকে তাকিয়ে কখনো কথা বলিনি। সারাজীবনেও সেই সাহস আমার হবে না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি গত ৫ বছরে কখনো কারো সাথে বেয়াদবি করিনাই। আমি সব সময় একটা জিনিস মাথায় রেখেছি মেরুরচর ইউনিয়নের সকল জনগন আমার মাথার মুকুট। আমি তাদের সেবক মাত্র। ছোট্ট বেলা থেকেই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাজপথের অগ্রভাগে থেকেছি সব সময়। গুলির মুখেও পিছপা হয়নি কখনো। ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের দায়িত্ব পালন করেছি। মানুষের বিপদে পাশে থেকেছি সব সময়। তাই আগামী ইউপি নির্বাচনে আবারো দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। মেরুরচর ইউপির মনোনয়ন নিয়ে অনেকেই মিথ্যা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। মনোনয়ন নিয়ে কারো কোন কথায় আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নিতে কখনো ভূল করেন না। তিনি সব সময় সঠিক সিদ্ধান্তই নেন। মেরুরচর ইউনিয়নেও সঠিক মানুষের হাতেই নৌকা তুলে দিবেন তিনি। যে নৌকা পানিতে ভাসিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিবেন আপনারা। আমি শুধু আপনাদের কাছে দোয়া চাই। যাতে করে আমি সারাজীবন আপনাদের পাশে থাকতে পারি,আপনাদের সেবা করতে পারি।
তিনি আরো বলেন, জামালপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ মহোদয় একজন পরিচ্ছন রাজনীতিবিদ ও সততার মূর্তিমান প্রতীক। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর যাবত তিনি দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ বাসীর সেবা করে আসছেন। বয়োবৃদ্ধ এই মানুষটি সব সময় এলাকার উন্নয়নের কথা ভাবেন। এলাকার মানুষের জন্য চিন্তা করেন। তিনিও সব সময় সটিক সিদ্ধান্তই গ্রহন করেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী কেউ কেউ এই মহত মানুষটিকে নিয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। দয়াকরে আপনারা এই মহান মানুষটিকে নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবেন না। কারন দুই উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষই তার সন্তান সমতুল্য। তিনি হচ্ছেন দুই উপজেলার মানুষের অভিভাবক। আপনারা সকলে সাবেক সফল মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ এমপি মহোদয়ের জন্য প্রাণখুলে দোয়া করবেন। মহান সৃষ্টিকর্তা যেনো তাকে দীর্ঘায়ু দান করেন।