– জাহিদুর রহমান উজ্জল
রাসেল শুধু তুমি নেই, এই বত্রিশ নাম্বার বাড়িটায়
তোমার পোষা গিরিবাজ,নোটন পায়রাগুলো এখনো আছে।
শ্বেত কবুতর উড়ে গিয়ে আবার ফিরে এসেছে তোমার বানানো বাসায়।
ফিঙ্গে বাসা বেঁধেছে বকুল গাছে, সজনার ডালগুলি নূয়ে পড়েছে বাসার ছাদে।
কোজাগরী পূর্ণিমা রাতের সবগুলি অালো
আজও উচলে পড়ে তোমার বারান্দায়।
তোমার অলকানন্দা লতিয়ে উঠেছে অনেক ওপরে। সবুজ পাতার ফাকে ফাকে সদ্যফুটা
হলুূদ ফুলগুলি তোমাকে খুঁজে বার বার।
ফাগুন এলে কোকিলরা এসে জডো হয়
তোমাকে দেখবে বলে। তোমাকে না পেয়ে কান্নার সুর তুলে সারাবেলা। পলাশ, শিমুল, বির্বন্ন হয়ে যায়।
তুমি শিউলি ফুল খুব ভালোবাসতে;
শরৎ ভোরে তোমার উঠানে আজো পড়ে থাকে শত শহস্র ফুলগুলো।
তুমি নেই বলে কেও কুড়িয়ে নেয় না, কেও মালা গাথে না।
তোমার শখের বেবী সাইকেল টি এখনো পড়ে আছে
যে সাইকেলে চড়ে লেকের পাড়ে ঘুরে বেড়াতে
আর ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখতো আমাদের দুখিনী মা।
সেই সাইকেলটি চে’ র সাইকেলের মতো ইতিহাস হয়ে আছে।
তোমার বিছানাটি মায়ের অদর মাখা হাতে সাজানো।
কোর্ট টাই, সেইছোট্ট ফতুয়া সব কিছু ঠিকঠাক অাছে। শুধু তুমি নেই।
যে সিড়িতে রক্ত দেখি, সেই রক্ত শুধু তোমার না ভাই, এটা পুরো বাঙ্গালী জাতির বুকের তাজা রক্ত।
এই রক্ত একজন খেটে খাওয়া ঘাম ঝড়ানো কৃষকের,
এই রক্ত একজন কারখানার শ্রমিকের,
এই রক্ত পদ্মা নদীর সাহসী মাঝির,
এই রক্ত মধ্যবিত্তের সরল মানুষের।
শ্রাবণের বৃষ্টিশ্নাত রাত এলে বুক ভেঙ্গে কান্না আসে তোমায় হারানোর ব্যাথায়।
তোমার সাজানো সব কিছু আছে
রাসেল শুধু তুমি নেই, রাসেল শুধু তুমি নেই।।
রচনা
১৮.১০.১৯