শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৭ পূর্বাহ্ন

স্বপ্নময় শেরপুরের মায়াবী লেক

রির্পোটারের নাম
  • খবর আপডেট সময় শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১
  • ২১৭ এই পর্যন্ত দেখেছেন

মুহাম্মদ আবু হেলাল,শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমির একটি জেলা। ভারত সীমান্তবর্তী এই জেলায় রয়েছে গজনী অবকাশ, মধুটিলা ইকোপার্ক, নয়াবাড়ির টিলা, সুতানালির দীঘি, রাজার পাহাড়, নাকুগাঁও স্থলবন্দরসহ নানা পর্যটন কেন্দ্র। এরই মধ্যে জেলায় নতুন আরেকটি দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ পিপাসুদের নজর কেড়েছে। জায়গাটির নাম ‘মায়াবী লেক’ পূর্বে যেটি বোগাগুছার তীর নামে পরিচিত ছিল।

শেরপুর জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে তাওয়াকুচা নামক স্থানে অবস্থিত মায়াবী লেক। পিচঢালা সড়ক দিয়ে মায়াবী লেকে আসতে আসতে দুচোখে ধরা দেবে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য, ধানক্ষেত, পাহাড়ঘেরা নদী, দিগন্তজোড়া মাঠ আর গ্রামীণ পরিবেশ। আরও এগোলে মন কাড়বে সড়কের দুই ধারে ঘন বন, ছোট ছোট টিলা। তাওয়াকুচা এলাকায় এসে মেঠোপথে হাঁটতে হবে প্রায় তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। এরপর দেখা মিলবে কাঙ্ক্ষিত মায়াবী লেকের।

জানা যায়, কয়েক মাস আগে স্থানীয় কয়েকজন যুবক ঘুরতে গিয়েছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার তাওয়াকুচা গ্রামের মায়াবী লেকে। তারা লেকের দৃশ্য ধারণ করে ও ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রকাশ করেন। এরপর মুহূর্তেই ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই ভিড় বাড়তে তাকে উঁচুনিচু পাহাড়, সবুজ বন আর চারদিকে লেকবিশিষ্ট এই মায়াবী লেকে। তবে সামাজিক বনায়ন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও প্রাণীর জন্য জেলা প্রশাসন এটিকে বন্ধ ঘোষণা করে। তবু আশপাশে পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। লেকের উপরে সুবিশাল নীল আকাশ আর নিচে সবুজ পাহাড়ের কোলে টলটলে জলরাশি। কালো জলে হঠাৎ তাকালে মনে হবে আকাশ যেন জলে নেমে এসেছে, পেতেছে গভীর মিতালি। চোখ ধাঁধিয়ে মন কেড়ে নেওয়া এ জলরাশি মায়াবী লেকের। পাখির চোখে সবুজ পাহাড়ঘেরা এ লেককে যে কেউ ভুল করে সুইজারল্যান্ড বা কাশ্মীরের কোনো এলাকা মনে করতে পারেন। সবচেয়ে বড় পাহাড়ে উঠলে দেখা যায় ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের চূড়া।


শনিবার ১৬অক্টোবর সরেজমিনে মায়াবী লেকে গিয়ে কথা হয় আরিয়ানের সাথে। তিনি বলেন, আমার নানার বাড়ি ঝিনাইগাতীতে। এখানে বেড়াতে এসে জানতে পারি মায়াবী লেকের কথা। তাই কয়েকজন মিলে ঘুরতে এসছি। তিনি আরও বলেন, এত সুন্দর একটা জায়গা শেরপুরে আছে, আমরা কেউ জানতাম না। মনে হচ্ছে এখানে বাড়িঘর তৈরি করে থেকে যাই। আরেক দর্শনার্থী সুমাইয়া জানান, আমি শেরপুরের নকলা উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। লেক এত সুন্দর যা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। যে কেউ ইচ্ছা করলে এক দিনের জন্য সময় বের করে ঘুরে যেতে পারেন মায়াবী লেক থেকে। তিনি আরও বলেন, এখানে এসে লেকের মনোমুগ্ধকর পাহাড়ি পরিবেশ ও স্বচ্ছ জলরাশি দেখে সত্যিই ভালো লাগছে। মায়াবী লেকের ওপরের ভিউ দেখলে যে কেউ মনে করবে এটি কাশ্মীর বা সুইজারল্যান্ড। জসিম মিয়া বলেন, তীব্র গরমে কেউ যেন তৃষ্ণায় কষ্ট না পায়, সে জন্য ঠান্ডা পানীয় বিক্রি করছি। মায়াবী লেকে আজই প্রথমবারের মতো দোকান বসালাম। মোটামুটি ভালোই বেচাবিক্রি হচ্ছে।

যেভাবে যাবেনঃ
রাজধানী ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে যেকোনো বাসে করে আসতে পারেন শেরপুর জেলায়। এরপর শেরপুর শহর থেকে সিএনজি বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যেতে হবে ঝিনাইগাতি উপজেলায়। ঝিনাইগাতি বাজার হয়ে ১০ কিলোমিটারের পথ গুরুচরন দুধনই। তারপর সীমান্ত সড়কপথে সোঁজা পশ্চিমে রাস্তা ধরে তাওয়াকুঁচা। বালিঝুড়ি বাজারের একটু আগে তাওয়াকুঁচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে পায়ে হেঁটে মাত্র ৩ কিলোমিটারের পথ। এরপরই সেই দর্শনীয় স্থান মায়াবী লেকের অবস্থান।

শেরপুরের জেলা প্রসাসক মো. মোমিনুর রশীদ বলেন, সৌন্দর্যের লীলাভূমির এই ছোট্ট জেলা শেরপুর। শেরপুরের শ্লোগান হচ্ছে ‘তুলসিমালার সৌগন্ধে-পর্যটনের আনন্দে’। পর্যটনে এবার নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে ‘মায়াবী লেক’। সত্যিই অপরূপ সুন্দর একটি জায়গা। অনেক পর্যটন একটু প্রশান্তির জন্য এখানে আসেন।

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
© কপিরাইট ২০১৭ গণজয়
CodeXive Software Inc.
themesba-lates1749691102