নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
সংস্কারের অভাবে বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর বাজার হতে-বাগাডুবা সড়কটি বেহাল হয়ে পড়েছে। মাত্র এক কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দের অভাব নেই। ২০১৯ সালের বন্যায় কাচাঁ সড়কটিতে ছোট-বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলতো দুরের কথা পায়ে হেটে চলাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে পথচারীদের। এতে দূর্ভোগ পোহাচ্ছে তিন গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ।
জানাগেছে,২০১৯ সালের বন্যায় বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের মেরুরচর বাজার থেকে বাগাডুবা পর্যন্ত কাচাঁ সড়কটি বেশ কয়েকটি স্থানে ভেঙ্গে যায়। দুই বছরেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ সড়কের মাঝে সেতু না থাকায় বন্যার পানির স্্েরাতে সড়কটি বার বার ভেঙ্গে যায়। এতে করে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ ফসলী জমির ব্যপক ক্ষতি হয়। গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের মাঝখানে ভেঙ্গে একটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বাগাডুবা গ্রামের সাথে সরাসরি মেরুরচর হয়ে উপজেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এলাকাবাসীর দাবি সড়কটিতে ছোট্ট একটি সেতু নির্মান হলে বন্যার সময় দুই পাশের পানি বের হতে পারবে। এতে করে সড়কটি আর ভাঙ্গবেনা। এছাড়াও দীর্ঘদিনেও সড়কটি সংস্কার না করায় দূর্ভোগ পোহাচ্ছে তিন গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ। পাচঁ মিনিটের রাস্তা যেতে হয় প্রায় ৩ কিলোমিটার ঘুরে। এতে সীমাহীন দূর্ভোগে স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। বয়স্ক ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াত এবং কৃষিপণ্যসহ মালামাল পরিবহনে দারুন ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকাবাসীকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,মেরুরচর-বাগাডুবা সড়কে একটি সেতু নির্মাণের জন্য তারা একাধিকবার স্থানীয় সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা,উপজেলা প্রকৌশলী,ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। আশ^াস মিলেছে বহুবার, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদাসিনতার কারনেই সড়কটি সংস্কার ও সেতু নির্মাণ হচ্ছেনা বলে দাবি তাদের।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য ছামিউল হক নেদা জানান,ভাঙ্গাচোরা সড়কে যানবাহন চলাচল না করায় দূর্ভোগে পড়েছে তিন গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। বাগাডুবা থেকে মেরুরচরের দুরত্ব মাত্র ১ কিলোমিটার। কিন্তু সড়কের বেহাল অবস্থার কারনে প্রায় তিন/চার কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে ফকিরপাড়া অথবা চিনারচর হয়ে মেরুরচর বাজারে আসতে হয়। এতে করে দারুণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ওই এলাকার মানুষ। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সড়কের মাঝে ছোট্ট একটি সেতু অথবা কালাভার্ট নির্মাণ ও রাস্তাটি সংস্কারের জোর দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বাগাডুবা গ্রামের কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী লাজু,লিয়াকত,সাদ্দাম,বাবু জানান,সেতু না থাকায় বন্যার সময় রাস্তার দুই পাশের পানি বের হতে পারেনা। ফলে পানির ¯্রােতে সড়কটি প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই আমাদের দাবি সড়কের মাঝখানে ছোট্ট একটি সেতু নির্মান ও সড়কটির দ্রুত সংস্কার করার। ছোট্ট একটি সেতুর জন্য প্রায় ৩ কিলোমিটার বাড়তি সড়ক ঘুরে আমাদের কলেজে যেতে হয়। আমাদের এই ভোগান্তি কবে লাঘব হবে জানিনা।
স্থানীয় বাসিন্দা ছামিউল হক,ময়না মিয়া,লাভলু মিয়া ও রাশেদুজ্জামান জানান,সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী। ফলে কোন যানবাহন পাওয়া যায়না। তাই অনেক সময় আমাদের গ্রামের কোন রোগীকে জরুরী অবস্থায় হাসপাতালে নিতে হলেও অনেক প্রকার সমস্যা হয়। একটি সেতু হলে আমাদের অনেক ভালো হবে।
বাগাডুবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিউল হাসান লাভলু বলেন, বন্যার সময় নৌকা আবার শুকনো মৌসুমেও পায়ে হেটে কিংবা তিন কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে যেতে হয়। সড়কটিতে একটি সেতু নির্মাণ হলে প্রতিবছর বন্যায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্থ হবেনা। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হবে।
এ ব্যাপারে মেরুরচর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জেহাদ বলেন, মেরুরচর-বাগাডুবা রাস্তার বিষয়টি মাথায় আছে । উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন,ওই সড়কের বিষয়টি খোজঁ নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।