এম.শাহীন আল আমীন ॥ কিয়ামতের মাঠ মানব জাতির বিচারের মাঠ, বিপদের মাঠ ও মুক্তির মাঠ। এ মাঠের বিচারক মহান আল্লাহ। এ মাঠে উম্মতের বিপদে একমাত্র সুপারিশকারী হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আমাদের প্রাণপ্রিয় বিশ্বনবী সারা জাহানের মুসলমানদের কলিজার টুকরা, নয়নের মনি বিশ্ব নন্দীত মহা মানব মহান আল্লাহর প্রিয় বন্ধু হযরত মোহাম্মদ (স:)। তিনি ছাড়া উম্মতের মহা বিপদে মহান আল্লাহর কাছে কেউ সুপারিশ করার সাহস পাবেন না। তারঁ সুপারিশেই পৃথিবীর তিন অংশ মানুষ জান্নাতী হবে। বিশ্ব নন্দীত মহা মানব মহান আল্লাহর প্রিয় বন্ধু হযরত মোহাম্মদ (স:) নিজে সাথে নিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবেন।
হযরত আনাস এর বর্ণনা মতে হযরত মোহাম্মদ (স:) বলেছেন, মুমিনগণ রোজ কিয়ামতের মাঠে সমবেতভাবে বলবে , আমরা আমাদের প্রভূর দরবারে কাইকে সুপারিশকারী নিয়োগ করছিনা কেন ? সুতারং তারা আদম(আ:) নিকট গিয়ে বলবে, আপনি সারা মানব জাতির পিতা। আল্লাহ স্বহস্তে আপনাকে পয়দা করেছেন। ফেরেশতা দ্বারা আপনাকে সেজদা করিয়েছেন এবং সকল বস্তুুর নাম শিখিয়েছেন। (অতএব) আমরা এ মহা সংকট হতে রক্ষা পেয়ে যাতে শান্তি স্বস্তি লাভ করতে , তজ্জন্য আপনি আমাদের প্রতিপালকের নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুণ। তিনি বলবেন আমি তোমাদের এই কাজের যোগ্য ব্যাক্তি নই। তিনি নিজের গুনাহের কথা স্বরণ করে লজ্জিত থাকবেন এবং বলবেন তোমরা হযরত নুহূ(আ:) নিকট যাও। আল্লাহ তাকে বিশ্ববাসীর জন্য প্রথম নবী হিসেবে পাঠিয়েছেন।
তখন সকল মুমিন বান্দাগণ হযরত নুহু(আ:) নিকট যাবেন। তখন হযরত নুহু(আ:) নিকট গেলে তিনি বলবেন আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি তখন আল্লাহর নিকট সেই প্রার্থনার কথা স্বরণ করে লজ্জাবোধ করবেন, যে প্রার্থনার ব্যাপারে তাঁর কোন জ্ঞান ছিলোনা। তাই তিনি বলবেন , তোমরা বরং আল্লাহর খলীল হযরত ইব্রাহিম(আ:) এর নিকট যাও। সকলে তখন তাঁর নিকট গেলে তিনি বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের যোগ্য নই। তোমরা বরং হযরত মূসা(আ:) নিকট যাও। তিনি আল্লাহর নিকট এমন একজন সম্মান্বিত বান্দা , যার সাথে আল্লাহ কথা বার্তা বলেছেন এবং তাওরাত কিতাব দান করেছেন।
এবার সকলে তাঁর (হযরত মূসা(আ:))নিকট গেলে তিনি বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি এক ব্যাক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার কারণে (সুপারিশের জন্য) তারঁ প্রভূর সামনে যেতে লজ্জাবোধ করবেন। তিনি বলবেন তোমরা বরং আল্লাহর বান্দা ও তারঁ রাসুল এবং আল্লাহর কালেমা ও রুহ হযরত ঈসা (আ:) নিকট যাও।
(সকলে তখন হযরত ঈসা (আ:) নিকট গেলে) তিনিঁ বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের যোগ্য নই। তোমরা বরং হযরত মোহাম্মদ (সঃ) নিকট যাও। তিনি আল্লাহর এমন বান্দা, আল্লাহ যার পূর্বাপরের সকল গুনাহ পূর্বেই মাফ করে দিয়েছেন।
হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলেন, তখন সকলে আমার নিকট আসবে। আমি তাদের সকলকে দেখামাত্র সেজদায় পতিত হবো। তারঁ ইচ্ছানুমাফিক সময় পর্যন্ত আমি সেজদায় থাকবো। তার পর আমাকে বলা হবে , আপনি মস্তকোত্তলন করুণ, আপনি প্রার্থনা করুণ। যা প্রার্থনা করবেন তাই দেওয়া হবে। আর যা বলতে চান, বলুন, শ্রবণ করা হবে। আর সুপারিশ করুণ আপনার সুপারিশ কবুল করা হবে। থখন আমি মাথা উঠিয়ে এমনভাবে আল্লাহর প্রশংসা করবো, যা আমাকে তিনি শিখিয়ে দিবেন। তার পর সুপারিশ করবো। সুপারিশের ব্যাপাওে আমাকে একটি সীমানা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে(সীমার আর্ন্তভ’ক্ত)সকলকে বেহেশতে পৌছিয়ে আমি ফিরে আসবো।
আমি আমার প্রভূকে দেখামাত্র পূর্বানুরুপ সেজদায় পতিত হবো। এবার আমাকে একটি সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। ওই সীমার অর্ন্তভূক্ত সকলের জন্য আমি সুপারিশ করবো এবং তাদেরকে বেহেশতে পৌছে দিয়ে আসবো। এভাবে তৃতীয়বারও করবো।
তার পর চর্তুথবার ফিরে এসে বলবো, কুরআন যাদেরকে আটকিয়ে রেখেছে এবং যাদের জন্য স্থায়ীভাবে দোযখে অবস্থান র্নিধারিত, এখন শুধু তারা ব্যতিত আর কেও দোযখে নেই।